Clilstore Facebook WA Linkedin Email
Login

This is a Clilstore unit. You can link all words to dictionaries.

সমুদ্রপথে সেইন্ট কিলডা - Seatrek to St Kilda

আমাদের পৃথিবীতে দ্বৈত বিশ্ব ঐতিহ্যের (Dual World Heritage) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত খুব কম সংখ্যক স্থানগুলির মধ্যে  প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের বিচারে একটি হ’ল সেইন্ট কিলডা। সৌন্দর্য ও বিশেষ বাস্তুতন্ত্রের জন্য  স্বীকৃতি আগে থেকেই ছিল। “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত” হিসেবে বর্ণিত এই স্থানের হারিয়ে যাওয়া ‘ক্রফ্ট’-কৃষক সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের স্বাক্ষ্যবহনের জন্যও সেইন্ট কিলডা স্বীকৃতি পেয়েছে ২০০৫ সালে।

পশ্চিমা দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমপ্রান্ত থেকে আটিলান্টিক মহাসাগরের ভিতর ৪০ মাইল দূরে অবস্থিত হলেও, এখানে মনুষ্য বসবাসের সুপ্রাচীন ইতিহাস আছে। যেমন আছে  চার থেকে পাঁচ হাজার বছর আগের ব্রোঞ্জযুগের নিদর্শন তেমনই রয়েছে ২০০০ বছরের পুরোনো লৌহযুগের টুকরো নজির। সাম্প্রতিকতম ইতিহাসে এই স্থানটি ছিল তুনবেক্বানের (Dunvegan)  ম্যাক্লৌচ’দের অধীনে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে এখানে বহির্বিশ্বের লোকজনদের আগমণ সুস্পষ্টরূপে লক্ষ্য করা যায়। ঐ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে সর্বপ্রথম এই স্থানের নৈসর্গিক আবেদনে সাড়া দিয়ে নিয়িমিত গ্রীষ্ম কালীন নৌবিহারে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। আর তারপর থেকেই স্থানীয় জনপদ দ্রুত সঙ্কুচিত হতে শুরু করে। সর্বশেষ ১৯৩০ সালে স্থানীয় জনবসতি সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়। পিছনে ফেলে রেখে যায়  একটি জনশূণ্য গ্রাম যা বয়ে চলেছে হারিয়ে যাওয়া এক জীবনযাত্রার প্রেতচ্ছায়া।

সেইন্ট কিলডাতে স্থায়ী বসতি নিশ্চিহ্ন হলেও, পর্যটনের আগ্রহ এখনও বিদ্যমান। ল্যোওসের (Lewis) পশ্চিম উপকূলের লখ (হ্রদ) মিয়ভেক্ব (Loch Miavaig) থেকে এখন একদিনে গিয়েই এখান থেকে ফিরে আসা যায়। উইক্ক (Uig) এর একজন স্থানীয় বাসিন্দা মার‍্যে ম্যাক্লৌচ সিট্রেক (Seatrek) নামের একটি ছোট কোম্পানি চালান। যা একগুচ্ছ পর্যটন পরিষেবা প্রদান করে। যদিও মার‍্যের দলে লোকবল খুব কম, তবুও তাদের স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতি অবদান বেশ চোখে পড়ে স্থানীয় ইস্কুলের বাচ্চাদের লেখা চিঠিপত্রে। সিট্রেক দ্রুত ও সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য শক্ত ও ফোলানো যায় এমন নৌকা অর্থাৎ RIBs (Rigid Inflatable Boats) ব্যবহার করে। আর সেইন্ট কিলডা তে গিয়ে ফিরে আসার মত দীর্ঘ যাত্রায় বড় নৌকা।

আজ মার‍্যে উইশ্চ (Uist) অধিবাসী একদল যাত্রীকে পেয়েছে। তাই যাত্রা আসলে শুরু হয় পার্নর‍্যেই  (Berneray) বন্দর থেকে। মূলদ্বীপ হির্স্তঃ  (Hirta) অভিমুখে দ্রুত যেতেই একপাশে চোখে পড়ে পর‍্যরেই (Boreray) ও স্তুপগুলি। খাড়ির আরও কাছে আসতেই দ্বীপটির  অনন্য ভৌগোলিক রূপরেখা  অচিরেই মন ছুঁয়ে যায়। ক্যামেরাগুলি  দ্রুত কাজে লেগে পড়ে।

স্কটল্যাণ্ডের জাতীয় ট্রাস্ট  প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সহায়তায় সেইন্ট কিলডার নিয়মিত দেখভাল করে। এখানকার মৌলিক বাস্তুতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে ভ্রমণকারীরা কী কী সঙ্গে আনতে পারবেন না সেই সংক্রান্ত কঠোর বিধিনিষেধ আছে। কিন্তু  গ্রামের সীমান্ত প্রাচীরের ভেতরের অংশে অবাধে ঘোরা যেতে পারে।

গীর্জাটি ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে নির্মিত এবং বিদ্যালয়টি ১৮৮৪ সালে। পুরোনো ঘরের একটিকে সংগ্রহশালায় রূপান্তরিত করা হয়েছে যাতে আগত দর্শনার্থীরা এখানকার মূল অধিবাসীদের জীবনশৈলী সম্বন্ধে ধারণা লাভ করতে পারে।

কিন্তু এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এই দ্বীপের বিশেষত্বগুলির কেবল একটি অংশ মাত্র। পরবর্তী ধাপে এখানকার অসাধারণ  প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের স্বাদ নিতে, পর্যটকদের  নৌকোয় রওনা দিতে হবে  হির্স্তঃ (Hirta) থেকে পর‍্যরেইয়ের  (Boreray) দিকে।

পর‍্যরেইয়ে ঢোকার মুখে আগতদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে একটি রামধনু। আবহাওয়া পরিষ্কার হতেই পাশের আরও সব স্তুপগুলি দৃশ্যমান হয়। এবারে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির গ্যানেট ও অন্যান্য সামুদ্রিক পাখিরা। আরও ভালো দৃশ্য পেতে  মার‍্যে নৌকাটিকে আরও কাছে ভেড়ায়।

এই দ্বীপগুলি প্রায় পাঁচ লক্ষ সামুদ্রিক পাখিদের প্রজনন স্থল। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক অর্থাৎ প্রায় ৬০০০০ এরও বেশী উত্তরাঞ্চলীয় গ্যানেটপাখির প্রজননশীল জোড়া। এছাড়াও  আছে প্রচুর পাফিন, ফালমার,  শ্যাগ এবং স্কিউয়া পাখিরা। কিন্তু এখানে গ্যানেট পাখিরাই মূলত আকাশ অন্ধকার করে রাখে।

হির্স্তঃ’তে (Hirta) ফেরার পথে আরও কিছু ছবি তোলার সুযোগ হয়। ফিরবার পালা চলে এল প্রায়, তবুও চলে যাবার আগে শেষবারের মত কিছু ছবি তুলতে সচেষ্ট যাত্রীরা। তারপর মার‍্যে পর‍্যরেই (Boreray) থেকে ওদের নিয়ে যায় হির্স্তঃ-এর শেযপর্বের দৃশ্যভ্রমণে।

আর তারপরে ঝুপ করে সময় ফুরিয়ে আসে। এবারে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পালা। যদিও শুরু হতে না হতেই শেষ,  তবুও এই সফর  যাত্রীদের  কেউই যে সহজে ভুলবে না তা বলাই যায়।

Clilstore Mediating MultilingualismIsland Voices Other Tongues

Short url:   https://clilstore.eu/cs/8568